শ্রম আদালতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিচার চলবে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ইউনূস যে রিট আবেদন করেছিলেন, তা খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে শ্রম আদালতে তাদের বিচার চলতে কোনো বাধা নেই।
অভিযোগ গঠনের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্ট এর আগে যে রুল দিয়েছিলেন, বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দীনের বেঞ্চ মঙ্গলবার শুনানি শেষে তা খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী বাপ্পী। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান।
এই রায়ের বিরুদ্ধে ইউনূস আপিল বিভাগে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তার আইনজীবী মামুন বলেন, যেতে তো হবেই। না গিয়ে উপায় কী?
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
গত ৬ জুন মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। অভিযুক্ত অন্য তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২১ জুন হাইকোর্টে আবেদন করেন মুহাম্মদ ইউনূস। আবেদনে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চাওয়া হয়।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৩ জুলাই রুল জারি করে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাশের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ মামলায় অভিযোগ গঠন কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তখন রুল শুনানির জন্য বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দীনের বেঞ্চ পাঠান।
এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এর আগেও হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন ইউনূস। সেই আবেদনে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিল আদালত। একইসঙ্গে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছিল।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ ২০২২ সালের ১৩ জুন দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছিল।
বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট শুনানি করে ২০২২ সালের গত ১৭ অগাস্ট রুল খারিজ করে রায় দেন। ফলে ইউনূসের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।