চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে দিনমজুর মাকসুদুর রহমান মাকসুদ হত্যা মামলায় মো. হোসেন (২৬) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হোসেন সন্দ্বীপ উপজেলার রহমতপুর এলাকার আদিক্কার বাড়ির মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।আজ বুধবার (৯ আগস্ট) ষষ্ঠ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু জানান, সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি মো. হোসনকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ৩৮০ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই যুবককে ৩০ বছরের কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, সন্দ্বীপ উপজেলা থেকে চাকরির সন্ধানে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বন্দরনগরীতে আসেন মাকসুদুর রহমান মাকসুদ। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। নগরীর হালিশহর থানার বি-ব্লক ২০ নম্বর লেনে একটি কক্ষে ব্যাচেলর বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ২০১৭ সালের ১২ মার্চ মাকসুদ ও হোসেনসহ চারজন বন্ধু চায়ের দোকানে চা পান করতে গেলে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাকসুদ আসামি হোসনকে মারধর করেন। মারধরের কথা এলাকার বড় ভাই ফরহাদের কানে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে মাকসুদ ও হোসেন ফরহাদের দোকানে গিয়ে দু’জনের ঝামেলা সমাধান করার চেষ্টা করে। সেখানে মাকসুদ এক পর্যায়ে হোসেনের গলার কলার ধরে। পরে দু’জন বাসায় চলে যায়। ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ৩টায় মাকসুদের রুমে ঢুকে হোসেন মাকসুদকে ছুরিকাঘাত করে মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। তার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে নগরীর ফইল্লাতলি বাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরদিন সকাল ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাকসুদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মাকসুদের ভাই মো. রিপন বাদী হয়ে মো. হোসেনকে একমাত্র আসামি করে হালিশহর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা হালিশহর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ১১ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন বিচারক। মামলায় ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেন।