বৃহস্পতিবার, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ

বিনা ভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার কথা আর চিন্তা করবেন না: মির্জা আব্বাস

কুশিক্ষিত লোকজন আজ দেশকে লুট করছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘একটি দেশ বলছে, এই সরকারকে আবার লাগবে। আমি বলতে চাই, সরকার নয়, আওয়ামী লীগ-বিএনপি নয়, দেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন। এ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেশের জনগণ মানে না। বিনা ভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার কথা দয়া করে আর চিন্তা করবেন না। সে স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।’

আজ শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে কালো পতাকা মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশে তিনটি শিক্ষা রয়েছে—অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর সুশিক্ষা। আজকে জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে কুশিক্ষিতরা বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। এই কুশিক্ষিতরা বিচারের প্রহসন করছেন। তারা জেলখানায় বিরোধী নেতাকর্মীদের পিটিয়ে হত্যা করছেন। এই কুশিক্ষিত লোকগুলো দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারা দেশকে ভালোবাসে না, ভালোবাসে টাকা।’

তিনি বলেন, ‘কুশিক্ষিত লোকজন আজ দেশকে লুট করছে। সরকারি কর্মকর্তারা এতে জড়িত। শুনেছি জনতা ব্যাংক থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশকে পঙ্গু বানিয়ে ফেলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিটিশ শাসক ও পাকিস্তানিরা এদেশ থেকে যাভাবে লুট করেছে, এর চেয়ে বেশি লুট করেছে এই সরকার। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছে। এদের ভিতর দেশপ্রেম নেই, ভালোবাসা নাই।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দ্রব্যমূল্য, তেল গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। সরকার কানে শোনে না। এখন ডিম ৬০ টাকা হালি। একটা ডিম ১৫ টাকা। কারণ কি? টাকার মান কমে গেছে। এদের (আওয়ামী লীগ) দুর্নীতির কারণে টাকার মান কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা ব্যাংকে টাকা রেখেছেন, তারা লাভের পরিবর্তে ১৪ শতাংশ টাকা কম পাবেন। আজকে বিদ্যুৎয়ের কার্ড থেকেও হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে লুটপাট। এ সরকারকে বিদায় করতে না পারলে দেশের মানুষ মারা যাবে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেক দেনা বাড়িয়েছেন। আর দেনা বাড়াবেন না। একদিন এই দেনার ঋণ আপনাদের শোধ করতেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘এদেশের জনগণের টাকায় যারা লেখা-পড়া করে পুলিশ-প্রশাসনে চাকরি নিয়েছেন, তারা আজকে আমাদের নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করছেন। তারা সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হয়ে আমাদের কর্মীদের বিচারের নামে প্রহসন করে আজকে জেলে দিচ্ছে। ওই কর্মকর্তারা আজকে জেলখানা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কর্মীদেরকে হত্যা করছে। আগে হত্যা করতো গুলি ও গুম করে। এখন জেলখানায় আটকে রেখে এবং বিনা চিকিৎসার আমাদের কর্মীদেরকে হত্যা করছে। এতো হামলা মামলা দিয়েও লোক কমানো যায়নি।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সরকার পতনের একদফা দাবিতে কালো পতাকা মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক আবদুস সালাম। বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

এ ছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারময়ান মোহাম্মদ শাহজাহান, উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহসম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, বিএনপিনেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদ ও আনম সাইফুল ইসলাম।

আরও পড়ুন