সোমবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ

বাবা-মা-বোন হারিয়ে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল সেই শিশু

গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতের টানা বর্ষণে এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলো রাজধানীবাসী। তীব্র বৃষ্টির কারণে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পর্শে একই পরিবারের তিনজনসহ ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে ৭ মাসের শিশু হোসাইন।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মিরপুরে ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন হাজী রোড ঝিলপাড় বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।

নিহতরা হলেন- সিএনজি অটোরিকশাচালক মো. মিজান (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (২৫), মেয়ে লিমা (৭) এবং তাদের উদ্ধার করতে যাওয়া মোহাম্মদ অনিক (২০)।

গতকাল সারা দিনই ছিল থেমে থেমে বৃষ্টি। সন্ধ্যার পর তা বাড়তে থাকে। এই বৃষ্টির মধ্যে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন মিজান। বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে যায়। সেই পানি ঠেলেই পরিবারকে নিয়ে চিড়িয়াখানা এলাকায় নিজেদের ভাড়া বাসার উদ্দেশে রওনা হন মিজান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিরপুরে কমার্স কলেজসংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশে রাস্তায় মিজান, তার স্ত্রী মুক্তা ও মেয়ে লিমা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান। আহত হলেও বেঁচে আছে মিজান-মুক্তা দম্পতির শিশুপুত্র হোসাইন। মিজানের পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ হারান একই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ অনিক নামের ওই তরুণ।

পরে ওই ঘটনায় আহত শিশু হোসাইনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান হিজড়া আমিনা ও বৃষ্টি।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর শিশুটিকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটি এখন ভালো আছে।

স্থানীয়লা জানান, সিরাজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে চোরাই লাইনের মাধ্যমে পাশের ঝিলপাড় বস্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছে। মাদরাসার দেয়ালের ভেতর দিয়ে বৈদ্যুতিক তার নেওয়া হয়েছে, যাতে সিমেন্ট দিয়ে প্রলেপ দেওয়া রয়েছে। তারের কিছু অংশ সেই প্রলেপের ওপরও বেরিয়ে রয়েছে। মূলত বৃষ্টির পানিতে তারের এই অংশ ডুবে যায়। সেই দেয়াল ঘেঁষে মিজান স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। মিজানের কোলে ছিল মেয়ে লিমা, আর স্ত্রী মুক্তার কোলে ছিল ছেলে হোসাইন। মাদরাসার দেয়ালের শেষপ্রান্তের আসতেই তারা পানিতে ছটফট করতে থাকেন। দূর থেকে অনেকেই এ ঘটনার ভিডিও করতে থাকেন। সে সময় অনিক নামের ওই তরুণ তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। এ সময় তিনিও বিদ্যুতায়িত হন।

ঘটনাস্থলের একটি দোকানের মালিক মো. জামাল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, তারা ছটপট করতে করতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মারা যান।

এদিকে এ দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, একটি শিশুকে পানি থেকে তোলা হচ্ছে। আর অন্য এক জায়গায় ৩ জন পড়ে আছে।

 

আরও পড়ুন