আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর।
রোববার (১ অক্টোবর) সকালে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর উত্তর বাড্ডা ওভার ব্রিজের নীচ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেরুল বাড্ডা এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে উপস্থিতি ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দীন, মু. আতাউর রহমান সরকার ও নাসির উদ্দীন,ছাত্রনেতা সালাহ উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অপশাসন ও দুঃশাসনে কারণে গণবিচ্ছিন্ন ও কূটনৈতিক বিপর্যয়ে পতনাতঙ্কে সরকার এখন পালানোর পথ খুঁজছে। জুলুমবাজ ও নৈশ্যভোটের সরকার ব্যাপকভিত্তিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, লুণ্ঠন ও অর্থপাচার করে দেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। অনিয়ন্ত্রিত লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি এখন খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ কমছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেকের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। যা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। কারণ, এ টাকা জনগণের। দুর্নীতিবাজরা জনগণের টাকা বিদেশে প্রচার করেছে। সে টাকা বাজেয়াপ্ত না করে দেশে ফেরত আনার আহ্বান জানান।
রাজধানীতে জামায়াতের মিছিল
তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই সরকার বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সহ বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং সারাদেশে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বায়বীয় মামলা দিয়ে ইতিহাসের বর্বরতম নির্যাতন চালাচ্ছে। বাকশালী ও জুলুমবাজ সরকারের হাত থেকে রেহাই পায়নি দেশ বরেণ্য আলেম- ওলামাও। বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজমী ও ব্যারিস্টার আরমান সহ অনেক বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও তাদের স্বজনদের দীর্ঘ মেয়াদে গুম করে রাখা হয়েছে। তাই এই ফ্যাসীবাদী সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হলে নৈশভোটের সরকারের পতনের কোন বিকল্প নেই।
তিনি সরকারকে অপরাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে গুম-খুন বন্ধ ও আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ সকল শীর্ষনেতার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ও গণমানুষের সেবক। জনগণের টাকায় তাদের বেতন হয়। তাই আপনারা অতিউৎসাহী হয়ে জনগণের বুকে গুলি চালাবেন না। মিথ্যা মামলা দিয়ে কথিত রিমান্ডের নামে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করবেন না। বিচারের নামে সাজা দেওয়ার অপসংস্কৃতিও বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় জনগণই এই অবৈধ সরকারের বিচারের মুখোমুখি করবে। তিনি নির্বাচনকালীন কেয়াটেকার সরকার প্রসঙ্গে বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার সরকারি ষড়যন্ত্র জনগণ আর কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না বরং সরকারের পদত্যাগ ও দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন সম্পন্ন দাবি আদায়ে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলবে। তিনি কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকলকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান এবং জনতার বিজয় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল শেষে বাসা ফেরার পথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জামায়াতের নেতা-কর্মীসহ ১৫/২০ জন পথচারী, শ্রমিক ও বৃদ্ধ মানুষকে রাস্তা থেকে ও বাস থেকে নামিয়ে আটক করার মতো অমানবিক আচরণ করে।