বৃহস্পতিবার, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ

নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে- মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার প্রধান আমেরিকা থেকে খালি হাতে ফিরে এসেছে।অনেক চেষ্টা করেছেন স্যাংশন তুলে নিতে পারেননি, তাদের কথা কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুনেছে? না। তারা প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে একটা একতরফা নির্বাচন করে নিতে, কিন্তু পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ এ ভোট চোরদের আর দেখতে চায় না। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তারা আমাদের ভয় দেখায়। হুমকি-ধমকি দেয়। কিন্তু কোনো কাজ হবে না। এখন একদফা এক দাবি ছাড়া কোন দাবী নাই।
আজ বুধবার চট্টগ্রামে রোড়মার্চের সমাপনি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সকাল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়া থাকলেও বিকেলে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে জড়ো হতে থাকে। নেতা কর্মীরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে নানা স্লোগান দেয়।মহানগরী ও জেলা থেকে আগত নেতা কর্মীরা হাতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমাবেশে যোগদেন।সমাবেশ লাভলেইন মোড়,কাজির দেউরী মোড়,সিআরবি পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা.শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্করের পরিচালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোনো মানুষ এমন কথা বলতে পারে না। খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেতা নন, এশিয়ার প্রথম মুসলিম নেত্রী। তিনি এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। মানুষের উপকার করেছেন। সে নেত্রীকে আজ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছেন। এসব আমরা মেনে নিতে পারি না।
মির্জা ফখরুল বলেন,আওয়ামী লীগ ভয় দেখায়, ভয় দেখিয়ে কোনো কাজ হবে না। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না।ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করায় আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে খুন ও গুম করেছে। আমাদের ৪৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ১৫ বছর ধরে নেতাকর্মীরা আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। শেখ হাসিনার সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন এ দেশ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে।নেতা কর্মীদের বলেন এখন ঘরে বসে থাকলে হবেনা।রাজপথ দখল করে এসবের ফয়সালা করতে হবে।
তিনি বলেন, বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার আর তা হবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, অহিংস আন্দোলন করছি। আমরা বিএনপির জন্য ভোট করতে চাই না, আমরা জনগণের জন্য ভোট করতে চাই। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। আমাদের নেত্রী খুব অসুস্থ তাকে সুচিকিৎসা করতে দিচ্ছে না। আমরা আন্দোলন করে তাকে মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, তারা বড় বড় প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করার জন্যই এ ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দেশের সব সেক্টর থেকে দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কুমিল্লা থেকে রোড়মার্চ চট্টগ্রাম অসা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি প্রমান করে সরকার তারা আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ দলটা এখন রাজনীতিক দল নয়।এটা পুলিশ,সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি রেজিমেন্টে পরিনত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে গিয়ে অনেকের পায়ে ধরেছে। টিকে থাকার জন্য ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক তাকে আর পাত্তা দেয়নি।অবৈধ ভোট চোর হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে।শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে।

আমির খসরু বলেন,সরকারের দেহটা আছে, কিন্তু প্রাণ নেই। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এরা এখন পাগল হয়ে গেছে। এদের হাতে আর সময় নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই বিদায় নিতে হবে। পতন সামনে দেখে পাগলের মতো আবোলতাবোল বলছে। ভোট চোর এ সরকারের কোনো রক্ষা নেই।
বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান ,বরকত উল্লাহ বুলু ,মোহাম্মদ শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, বিএনপি চেয়ারপারর্সনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জয়নাল আবেদীন ফারুক আবুল খায়ের ভূঞা, জয়নাল আবেদীন,গোলাম আকবর খন্দকার ,এস এম ফজলুল হক , যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি,সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম , চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি আহবায়ক আবু সুফিয়ান ,কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, কেন্দ্রীয় শ্রমিম দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন. ব্যারিষ্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন . হুমাম কাদের চৌধুরী.সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, গাজী শাহজাহান জুয়েল. ম্যামাচিং আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া, নুরুল বশর চৌধুরী, এনামুল হক এনাম , এম এ হালিম , নুরুল আমিন চেয়ারম্যার ,সরোয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন,জাকের হোসেন রোকন প্রমুখ।
বিএনপি অনশনসহ ৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে ৯ অক্টোবর ঢাকাসহ জেলা ও মহানগরে মিছিল-সমাবেশ, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ১২ অক্টোবর ঢাকায় ছাত্র কনভেনশন।
১৪ অক্টোবর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে আবারও সারা দেশে জেলা ও মহানগরে অনশন । সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ১৬ অক্টোবর যুব কনভেনশন এবং ১৮ অক্টোবর জনসমাবেশ এর কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

 

আরও পড়ুন