প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা দেশকে গড়ে তুলছি। আমি আপনাদের কাছে একটা উপহার নিয়ে এসেছি। নদীর তল দিয়ে গাড়ি চলে। ঘুটঘুট করে বাড়ি চলে যাবেন। এ প্রকল্পে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যারা জড়িত ছিলেন, দিনরাত পরিশ্রম করেছেন, সবাইকে আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আরও ১১টি প্রকল্প আপনাদের জন্য উপহার হিসেবে উদ্বোধন করে দিলাম। আজকের এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে গত নির্বাচনে আপনারা ভোট দিয়েছিলেন বলে। নৌকা যখনই সরকারে এসেছে, দেশ ও মানুষের উন্নয়ন করেছে।
নৌকা যখনই সরকারে এসেছে, দেশ ও মানুষের উন্নয়ন করেছে । শনিবার (২৮ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) মাঠে এক জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।
টানেলের নির্মাণকাজ সময়মতো সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশেষ উপহার নিয়ে এসেছি। আমরা কর্ণফুলীর নদীর তলে টানেল করে দিয়েছি। এই টানেলের ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে সময় কম লাগবে। এই টানেল এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।
তিনি বলেন, আমি তো সবই হারিয়েছি ৭৫-এর ১৫ আগস্ট। ছয় বছর দেশে আসতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। একরকম জোর করেই দেশে ফেরা। আসার পর থেকে বাংলাদেশে মানুষের জন্য কাজ করছি। চাই, কীভাবে দেশের মানুষকে ভালো রাখা যায়। এ চট্টগ্রামের কত নেতা ছিলেন, যারা জীবন দিয়ে সংগ্রাম করেছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
সকাল থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আএয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা ব্যানার,পেষ্টুন,এক রংগের টি শার্ট পরে মিছিল সহকারে যোগদেন।সমাবেশ টি রুপ নেয় নির্বাচনী জনসভায়।দক্ষিণ জেলার ৭ টি আসনে এমপি আওয়ামীলীগের হওয়ায় তারা জনসমাগম দেখায় বেশী।উত্তর ও মহানগর থেকে প্রচুর নেতা কর্মী সমাবেশে যোগদেন।কর্ণফুলীর দক্ষিণে পরিণত হয় উৎসবের আমেজ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া এবং ফিলিস্তিন যুদ্ধে সারা বিশ্বেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। তাই আমরা ১ কোটি মানুষকে পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। এর মাধ্যমে তাদেরকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশে উন্নয়ন করি। আর বিএনপি-জামায়াত দেশ ধ্বংস করে। আগুন দিয়ে জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার ইতিহাস তাদের। জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত। তারা খুন করা ছাড়া আর কিছু জানে না। তারা আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছে। তারা যখন ক্ষমতায় থাকে দুর্নীতি ও লুটপাট করে।
তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলা করে আমাকে দিনে-দুপুরে হত্যা করতে চেয়েছিল। ওই হামলায় ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। চট্টগ্রাম ছিল সন্ত্রাসের রাজত্ব। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই সন্ত্রাস দূর করে একটি শান্তির অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় চেয়েছি আমাদের দেশটা উন্নত হোক। আগে কক্সবাজার যেতে অনেক সময় লাগতো। এখন আর বেশি সময় লাগবে না। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে এখন থেকে আর শহরে ঢুকতে হবে না। যানজটে পড়তে হবে না। আমরা এশিয়ান হাইওয়ের সাথে সংযুক্ত হবো যা আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখবে।
এর আগে বেলা ১১টার পর হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে সড়ক পথে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে পৌঁছান। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু টানেলের একটি ফলক উন্মোচন করেন। সেখান থেকে টোল দিয়ে টানেল পার হন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীরা।