মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্রতিষ্ঠিত। এ একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ক্যাডেটদের মনে রাখতে হবে, স্বাধীন বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান প্রথম বঙ্গবন্ধু তৈরি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানের ক্যাডেটদের বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে তৈরি হতে হবে। তাদের আচরণ, গুণগত মান, উৎকর্ষ, কর্তব্য, দায়িত্বশীলতা, সততা, সৃজনশীলতা দেশে ও দেশের বাইরে যেন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিদেশের একটা জাহাজে একজন ক্যাডেট যখন কাজ করবেন, তার আচরণ, প্রজ্ঞা, কর্মদক্ষতা দিয়ে পরিস্ফুট হবে যে, এই হচ্ছে বাংলাদেশ। ক্যাডেটদের প্রত্যেককে বাংলাদেশের একজন অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এটা প্রত্যাশা করে।
মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, চট্টগ্রাম এর ৪২তম ব্যাচের ক্যাডেটদের পাসিং আউট প্যারেড-২০২৩ অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১ নভেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ৯ ঘটিকায় মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাডেটদের আউট প্যারেড-২০২৩ অনুষ্টিত হয়।
একাডেমির ৪২তম পাসিং আউট ব্যাচের ক্যাডেট কর্তৃক মাননীয় মন্ত্রীকে সম্মানি সালাম প্রদান করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মেরিন ফিশারিজ একাডেমির সম্মানিত অধ্যক্ষ, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ হাসান, (জি), বিসিজিএমএস, পিএসসি, বিএন।
এ বছর একাডেমির ৪২তম ব্যাচে নটিক্যাল বিভাগে ৬০জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫৯জন (০৪জন
মহিলা) এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ১৯জন (০১ জন মহিলা) ক্যাডেটসহ সর্বমোট ১৩৮জন (০৫জন মহিলা) ক্যাডেট পাসড আউট হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি সাফল্যের স্বীকৃতি পুরস্কার হিসেবে ক্যাডেটদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন।
এ বছর ৪২তম ব্যাচের ক্যাডেটদের মধ্যে সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী ক্যাডেট হিসেবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্যাডেট এইচ, এম, আবরার অয়ন (ক্যাডেট নং-২৩৬০ )‘বেস্ট অল রাউন্ডার গোল্ড মেডেল’ প্রাপ্ত হয়। তিন বিভাগের সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী ক্যাডেট হিসেবে নটিক্যাল সায়েন্স বিভাগ হতে ক্যাডেট এস. এম. মারুফ হোসেন নাবিল (ক্যাডেট নং-২২৮৩), মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ হতে ক্যাডেট মোঃ আল রিফাত (ক্যাডেট নং-২৩৫৩) এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগ হতে ক্যাডেট মোহাম্মদ সাজিদ হোসেন (ক্যাডেট নং-২৩৯৬) ‘বেস্ট ইন প্রফেশনাল ট্রেনিং সিলভার মেডেল’ পদক প্রাপ্ত হয়। এছাড়াও মহিলা ক্যাডেটদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মহিলা ক্যাডেট হিসেবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্যাডেট সুরাইয়া আক্তার (ক্যাডেট নং-২৩৯১) ‘বেস্ট ফিমেইল ইন প্রফেশনাল ট্রেনিং সিলভার মেডেল’ পদক প্রাপ্ত হয়।
গ্র্যাজুয়েশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরো বলেন, “আপনার অনৈতিকতা, মূল্যবোধহীনতা ও অসততা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ধ্বংস করে দেবে। অপরদিকে আপনার কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা, আন্তরিকতা ও শিক্ষার প্রসার ঘটাতে পারলে বিশ্বের বুকে আপনিই হবেন বাংলাদেশ। আপনিই হবেন আমাদের লাল সবুজের পতাকা। আপনিই হবেন ত্রিশ লক্ষ শহিদ আর দুই লক্ষ সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কারিগর। বাংলাদেশের সংবিধান, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আপনাদের সবটুকু পবিত্র আনুগত্য ও দায়িত্বশীলতা থাকতে হবে। প্রয়োজনবোধে নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেশমাতৃকার ভাবমূর্তি রক্ষা করা যেন আপনাদের ব্রত হয় । আমরা যেন বলতে পারি দেশের সোনালী সন্তান আপনারা। বিশ্ব পরিমন্ডলে আসবে। সততার মধ্য দিয়ে চৌকস প্রশিক্ষিত ক্যাডেটরা সুনীল অর্থনীতিতে অবদান রাখার মাধ্যমে দেশের আর্থসামজিক উন্নয়নে নতুন
দ্বার উন্মোচন করবে।
একাডেমির ৪২তম ব্যাচের ক্যাডেটদের আউট প্যারেড-২০২৩ অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট, সরকারি শিপিং অফিসসহ অন্যান্য মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।