ভারতে চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বিশ্ব মঞ্চে সময়টা ভালো যাচ্ছে না টাইগারদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে আসর শুরু করলেও এরপর টানা ছয় ম্যাচে পরাজয়ে সবার আগে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে সাকিব বাহিনী। এমনকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন নিয়েও জেগেছে সংশয়।
বিশ্বকাপে এখনো দুই ম্যাচ বাকি বাংলাদেশের। আগামী ৬ নভেম্বর দিল্লিতে শ্রীলঙ্কা ও ১১ নভেম্বর পুনেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে সাকিব বাহিনী। তবে সেই দুই ম্যাচ বাকি রেখেই অনেকটা লুকিয়ে আর গণমাধ্যমের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বোর্ডের বেশ কয়েকজন পরিচালক।
গতকাল কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরেছেন তারা। তার আগে বাংলাদেশ দলকে সাহস জোগাতে নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আগে পাপনের সাথে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস চৌধুরী ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু ভারতে গিয়েছিলেন। এরপর ডাচদের কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর সবশেষ পাকিস্তানের কাছেও পরাজয়ের সাক্ষী ছিলেন তারা।
তবে মাঠের পারফরম্যান্সে ভরাডুবির কারণে ভারত সফরটা সুখের হলো না দেশের ক্রিকেট নীতিনির্ধারকদের। নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আগে-পরে কয়েক দফায় বৈঠক করেও তারা ফেরাতে পারেনি দলের ফর্ম। উল্টো ডাচ কেলেঙ্কারির পর পাকিস্তানের বিপক্ষে দেখা গেছে আরও ভঙ্গুর এক বাংলাদেশ দলকে। তাই তো টুর্নামেন্টের দুই ম্যাচ বাকি রেখেই দেশে ফিরেছেন বিসিবির কর্তারা।
বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের চাপ এড়াতে অনেকটা গোপনেই দেশে ফেরেন তারা। সেখান থেকে নিজ নিজ গাড়িতে চড়ে বেশ তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যান। সূত্রের খবর, টুর্নামেন্ট চলাকালীন কোচিং স্টাফ নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে না বিসিবি। আপাতত তারা কথা বলবেন না তামিম-সাকিব পাল্টাপাল্টি ভিডিও বার্তা এবং ইন্টারভিউগুলো নিয়েও। তবে, ক্রিকেটাররা দেশে ফিরলে অধিনায়কত্ব ইস্যুসহ নানা বিষয়ে বেশকিছু বড় সিদ্ধান্ত আসতে পারে দেশের ক্রিকেটে।
এদিকে সাকিব আল হাসানদের মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে চাপে রয়েছেন বিসিবি কর্তারাও। অথচ দেশের বাইরে কোনো টুর্নামেন্ট এলেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় বিসিবি কর্তাদের। ক্রিকেটারদের মাঠের খেলায় মনোবল জোগাতে চলে এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণ। তাদের উপস্থিতি খেলোয়াড়দের মনোবল আদতে বাড়ায় কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।
তবে, সফরকারীদের পকেট যে ভারী হয় সেটা তো আর না বললেই নয়। দলের পারফরম্যান্স যাই হোক, বিদেশ সফরের নিয়মিত টিএ, ডিএ’গুলো ঠিকই জমা হয় তাদের অ্যাকাউন্টে। তবে বিপত্তিটা বাঁধে দল ভালো না করলে। গণমাধ্যমের তোপ আর সমালোচনার মুখে, বিদেশ সফরটা খুব একটা ভালো কাটে না এসব নীতিনির্ধারকদের।
এই যেমন এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভারত সফরের ব্যস্ততায় বিসিবি কর্তারা। বোর্ড প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে, প্রধান নির্বাহী, বিসিবি পরিচালক কিংবা ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান, ক্যারিয়ারে অনেকেই পেশাদার ক্রিকেট না খেললেও দলের সঙ্গে তাদের সরব উপস্থিতি ছিল বরাবরই। বোর্ড কর্তাদের এমন বিশাল বহর অবশ্য দেখা যায় না অন্য দলগুলোর ক্ষেত্রে।