আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খেলা হবে। ঢাকায় খেলা হবে, চট্টগ্রামে খেলা হবে, সিলেটে খেলা হবে, খুলনায় খেলা হবে, রংপুরে খেলা হবে, বরিশালে খেলা হবে। প্রস্তুত, সতর্ক পাহারায় আপনারা আছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশ, খেলা হবে। কোয়ার্টার ফাইনাল হয়ে গেছে, আমরা জিতে গেছি। সামনে সেমিফাইনাল, তারপর ফাইনাল হবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। ঠিক আছে? সব রেডি তো? বাংলার মানুষ ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর আরামবাগে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় জনসভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় জনসভার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোথায়? বাড়াবাড়ি, লাফালাফি কোথায়? ২৮ তারিখ, তারপর ২৯, ৩০, ৩১…। নভেম্বরের আজ ৪ তারিখ। শেখ হাসিনা নির্ধারিত সময়ে মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেছেন। ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ, এই ঢাকা সিটি আর ১৫ বছর পরের বাংলাদেশ, এই ঢাকা শহর দিনে-রাতের পার্থক্য।
তিনি বলেন, আজকের এ সময়ে একটি বিপদে আমরা আছি। সেটা বিশ্ব সংকট। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এখন মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, সুদানে যুদ্ধ, আজকে সারা দুনিয়া এ বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে— বাংলাদেশ কিছুটা সমস্যায় আছে। কিন্তু মনে রাখবেন যে নেতা বাংলাদেশের জনগণের জন্য রাতে ঘুমান না। ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার বেশি ঘুমান না। তিনি জনগণের কথা বলেন, চিন্তা করেন, কাজ করেন। বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনার মতো এত সৎ নেতা, এত জনপ্রিয় নেতা, এত দক্ষ নেতা, এত সফল নেতা আপনারা কি আর দেখেছেন? শেখ হাসিনার মতো জনদরদি আরেকজন নেতা কি আমরা পেয়েছি?
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের গ্যাপ ছিল। সেই গ্যাপ পূরণের জন্য উরসুলা ভন ডের লেইনের (ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট) দাওয়াতে নেত্রী ছুটে গেছেন। সেখানেও তিনি যা কিছু পেয়েছেন, সেটা আমার দেশের জনগণের জন্য।
এ সময় বিদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা তাকে বারবার নির্বাচিত করব। তিনি বাংলাদেশকে যেখানে নিয়ে গেছেন, বিশ্ব নেতারা প্রশংসা করেন। আর আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী একটি দল, তাদের দোসররা শেখ হসিনাকে সম্মান করতে পারে না। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য এত কিছু করেছেন। একটা ধন্যবাদও এরা কোনোদিন দিতে পারেনি। দুর্ভাগ্য আমাদের। শেখ হাসিনা একা নির্বাচন করলে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ (ভোট) পাবেন। এই জনপ্রিয়তা ওরা হিংসা করে, জ্বালায় মরে।
বিএনপি-জামায়াতকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী নির্বাচনে এই জঙ্গিবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে আবারও বিজয়ী করতে হবে। ঠিক আছে… বাংলাদেশের গণতন্ত্র এদের (বিএনপি-জামায়াত) হাতে নিরাপদ নয়। এরা ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবে, রক্তের বন্যা বইয়ে দেবে, লাশের পাহাড় সৃষ্টি করবে। এই অপশক্তির হাতে আমরা বঙ্গবন্ধুর লাখো শহিদের বাংলাদেশকে তুলে দিতে পারি না। সেজন্য বাংলার মানুষ ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুত। সারা বাংলায় খেলা হবে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা বলেছিল ২৮ তারিখের পর শেখ হাসিনার সরকার থাকবে না। তিনি আছেন, তিনি থাকবেন। তিনি তো আগামীর বিজয় বার্তা নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। টিভিতে দেখলাম, দৌড়ে পালাচ্ছে। হরতাল ঘোষণার জন্য মির্জা ফখরুলকে পেছন থেকে টানছে। তারা বলেছিল, আমরা নাকি পালাানোর পথ পাবো না। এখন কোথায়? আমির খসরু কোথায়? গয়েশ্বর বাবু কই? তারা কোনো কিছু না পেয়ে গুহায় ঢুকেছে। সেখাান থেকে ব্রিফিং করছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খোকন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
যৌথভাবে জনসভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ।