দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশকে জটিল ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যা পূর্ববর্তী সময়ের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে উন্মোচন করছে। এই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
আজ ১৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ‘বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি।
তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে টেকসই ও অগ্রগামী করতে অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এ লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, আসন সংখ্যা এক- তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করা এবং এই ব্যবস্থা ২/৩ টার্ম বলবৎ রাখা ও প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অধিকহারে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া। এর অর্থ মনোনয়নের ক্ষেত্রে কোন বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা এবং সকল রাজনৈতিক দলের সকল কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীকে অর্ন্তভুক্ত করার বিষয়টি মনিটরিং করা সহ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, সাম্প্রদায়িকতা ও নারী বিদ্বেষী মনোভাব প্রতিরোধ; আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, দলিত সহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার সংরক্ষণ; নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া অধিকার এবং গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিতে সংগঠনের পক্ষে সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আজকের সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে নারীকে অবমাননা করার দিকটির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে নারী সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এসময় তিনি সুশাসন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জনগণকে সাথে নিয়ে জনবান্ধব নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এবং নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনকালে এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জোর দাবি জানান।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি একক মন্ত্রণালয় হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ও নারীর অধিকার সুরক্ষায় এই মন্ত্রণালয়ের জোরালো ভূমিকা পালন করবে- এটি মহিলা পরিষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও দাবি।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।