সোমবার, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ

প্রথম টেস্ট, ৪র্থ দিন জয়ের সুবাস নিয়ে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১০০.৪ ওভারে ৩৩৮ (মিরাজ ৫০*, শরিফুল ১০, নাঈম ৪, তাইজুল ০, সোহান ১০, মুশফিকুর ৬৭, দীপু ১৮, শান্ত ১০৫; জাকির ১৭, জয় ৮, মুমিনুল ৪০), লিড ৩৩১ রানের।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ৮৫.১ ওভারে ৩১০ (জয় ৮৬, শান্ত ৩৭, মুমিনুল ৩৭, সোহান ২৯)

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১০১.৫ ওভারে ৩১৭ (এজাজ প্যাটেল ১*; ল্যাথাম ২১, কনওয়ে ১২, হেনরি নিকোলস ১৯, ড্যারিল মিচেল ৪১, টম ব্লান্ডেল ৬, গ্লেন ফিলিপস ৪২, কেন উইলিয়ামসন ১০৪, ইশ সোধি ০, কাইল জেমিসন ২৩, টিম সাউদি ৩৫)

৩৩২ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পর দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল স্পিনারদের। তারা সফল। স্পিনারদের কবলে পড়ে নিউজিল্যান্ড ব্যাটারদের নাভিশ্বাস উঠেছে। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ চালকের আসনে। শুধু তাই নয়, জয়ের সুবাস নিয়ে শুক্রবারের খেলা শেষ করেছে স্বাগতিকরা। জিততে আর ৩ উইকেট দরকার তাদের। আর নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন এখনও ২১৯ রান। ড্যারিল মিচেল ৪৪ আর ইশ সোধি ৭ রানে অপরাজিত আছেন। ৭ উইকেটে ১১৪ রান সফরকারীদের।

আলোকস্বল্পতার কারণে বেশ আগেই দিনের শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। তার আগে অষ্টম উইকেটের দেখা পেয়েছিল বাংলাদেশ, কিন্তু সোধি রিভিউ নিয়ে আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন।

তাইজুলের চতুর্থ শিকার জেমিসমন

ড্যারিল মিচেল একাই লড়ছেন। অন্য প্রান্তের ব্যাটাররা স্পিনারদের কাছে নতজানু। সবশেষ কাইল জেমিসন বিদায় নিলেন এলবিডব্লিউ হয়ে। ২৮ বলে ৯ রান করে তাইজুল ইসলামের চতুর্থ শিকার হন তিনি। রিভিউ নিয়েও উইকেট বাঁচাতে পারেননি জেমিসন। ১০২ রানে ৭ উইকেট হারালো নিউজিল্যান্ড। এক ম্যাচে দুইবার চার উইকেট নিলেন তাইজুল।

নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটি ভাঙলেন নাঈম

৬০ রানে ৫ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড সর্বোচ্চ জুটি গড়েছিল গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেলের সৌজন্যে। ২১ রানের এই জুটি ভেঙে দেন নাঈম হাসান। তার এলবিডব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে শেষ মুহূর্তে রিভিউ নেন শান্ত। সফল হয় বাংলাদেশ। ২৬ বলে ১ চারে ১২ রানে থামেন গ্লেন ফিলিপস। ৮১ রানে ৬ উইকেট হারালো নিউজিল্যান্ড।

নাঈম তার পরের ওভারে মিচেলকে ফেরাতে পারতেন। ২৯ রানে তার সহজ ক্যাচ ফেলে দেন শাহাদাত হোসেন দীপু।

তাইজুলের তৃতীয় শিকার ব্লান্ডেল

বাংলাদেশি স্পিনে ধুঁকছে নিউজিল্যান্ড। বিশেষ করে তাইজুল ইসলাম আবার জাদু দেখালেন। ৬০ রানে ৫ উইকেট হারালো নিউজিল্যান্ড, যার মধ্যে তিনটি নিয়েছেন এই স্পিনার। সবশেষ টম ব্লান্ডেল ৬ রান করে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ হন।

পঞ্চাশের আগেই নিউজিল্যান্ডের চার উইকেট নিলো বাংলাদেশ

চা বিরতির আগে ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ সেশনে তাইজুল ইসলাম আরেকবার আঘাত হানলেন। তাতে পঞ্চাশের আগেই চার উইকেট হারালো নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশি স্পিনারের বল ডেভন কনওয়ের ব্যাট-প্যাড ছুঁয়ে শর্ট লেগে শাহাদাত হোসেন দীপুর হাতে বল ধরা পড়ে। ৭৬ বলে ২২ রান করেন নিউজিল্যান্ড ব্যাটার। ৪৬ রানে চার উইকেট হারালো সফরকারীরা।

বাংলাদেশের স্পিন বোলিংয়ে বিপাকে নিউজিল্যান্ড

ইনিংসের প্রথম ওভারেই উদ্বোধনী জুটি ভেঙে দেন শরিফুল ইসলাম। টম ল্যাথাম শূন্য করে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ হন। দলের কোনও রান না হতে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

কেন উইলিয়ামসন ও ডেভন কনওয়ে সতর্ক ব্যাটিং করতে থাকেন। দশম ওভারে আঘাত করেন তাইজুল ইসলাম। ২৪ বলে ১১ রান করে এলবিডব্লিউ হন উইলিয়ামসন। মেহেদী হাসান মিরাজ বল হাতে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন। হেনরি নিকলসকে ২ রানে শরিফুল ইসলামের ক্যাচ বানান। ৩০ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ দারুণ শুরু করেছে। দ্বিতীয় সেশন শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৭ রান।

নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ

মুমিনুল হক আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন কত রান নিরাপদ, সেটা বুঝতে পারছেন না। তবে চারশ হলে স্বস্তিবোধ করতেন। ওত রানের লিড পায়নি বাংলাদেশ, এমনকি ধারেকাছেও নেই। তবে স্পিনাররা দারুণ কিছু করলে নিশ্চিতভাবে নিউজিল্যান্ডকে ভুগতে হবে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৮ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। তাতে সফরকারীদের ৩৩২ রানের টার্গেট দিতে পেরেছে তারা।

এদিন ১০৪ রানে অপরাজিত নেমে শুরুতেই নাজমুল হোসেন শান্ত বিদায় নেন আর এক রান যোগ করে। তারপরই মুশফিকুর রহিম হাফ সেঞ্চুরি করলেও বিদায় নেন এলবিডব্লিউ হয়ে। শাহাদাত হোসেন দীপু সুবিধা করতে পারেননি। দুইবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান। থার্ড আম্পায়ারের সৌজন্যে মিরাজও জীবন পান একবার, আরেকবার ফিল্ডারের হাত ফসকে বেঁচে যান। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৯৬ রান করেছে বাংলাদেশ।

তিন উইকেট হাতে রেখে দ্বিতীয় সেশনে খেলতে নেমে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দ্রুত নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম বিদায় নেন। মিরাজ ফিফটি করে অপরাজিত থাকলেও শরিফুল ইসলাম তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। ১০ রানে শরিফুল আউট হন এজাজ প্যাটেলের বলে।

১৪৮ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের সফল বোলার এজাজ। আরেক স্পিনার ইশ সোধি নেন ২ উইকেট।

লাঞ্চের পর বিপদে বাংলাদেশ, মিরাজের ফিফটি

লাঞ্চের পর বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে ১০ বলের মধ্যে জোড়া উইকেট পড়েছে। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারে ইশ সোধি ৪ রানে নাঈম হাসানকে টম ল্যাথামের ক্যাচ বানান। পরের ওভারে এজাজ প্যাটেলের শিকার হন নতুন ব্যাটার তাইজুল ইসলাম। শূন্য করে হেনরি নিকলসের ক্যাচ হন তিনি। ৩১২ রানে ৯ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলামের সঙ্গে শেষ জুটিতে লিড বাড়ানোর পথে ৭৬ বলে ফিফটি করেন মিরাজ। দুই বল পরই অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৩৩৮ রানে তাদের গুটিয়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। মিরাজ ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন।

তিনশ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চে বাংলাদেশ

প্রথম সেশনের শেষ বলে মেহেদী হাসান মিরাজ বাউন্ডারি মারলেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের লিড ছাড়ালো তিনশ রানে। লাঞ্চের আগে বাংলাদেশ করেছে ৭ উইকেটে ৩০৮ রান। মিরাজ ৩২ ও নাঈম ৩ রানে অপরাজিত আছেন।

এর আগে দিনের শুরুতেই নাজমুল হোসেন শান্ত বিদায় নেন। আর একটি রান যোগ করেন তিনি। তারপরই মুশফিকুর রহিম করেন হাফ সেঞ্চুরি। বিদায় নেন এলবিডব্লিউ হয়ে। শাহাদাত হোসেন দীপু সুবিধা করতে পারেননি। দুইবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান। থার্ড আম্পায়ারের সৌজন্যে মিরাজও জীবন পান একবার, আরেকবার ফিল্ডারের হাত ফসকে বেঁচে যান।

চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৯৬ রান করেছে বাংলাদেশ।

দুইবার পাওয়া জীবন কাজে লাগাতে পারলেন না সোহান

একবার রিভিউ নিয়ে, আরেকবার ফিল্ডারের হাত ফসকে জীবন পেলেন নুরুল হাসান সোহান।

৮৯তম ওভারে এজাজ প্যাটেলের বলে এলবিডব্লিউ হন বাংলাদেশি ব্যাটার। তখন তার রান ৮। দ্রুত রিভিউ নেন সোহান এবং আম্পায়ার আহসান রাজা সিদ্ধান্ত পাল্টান।

পরের ওভারে গ্লেন ফিলিপসের বল স্লিপে উড়ান সোহান। বাঁদিকে ঝাঁপান ড্যারিল মিচেল, কিন্তু বল ধরতে পারেননি। তখন সোহানের রান ৯। দুইবার জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ফিলিপসের পরের ওভারে ফিরতি ক্যাচ তুলে দেন। ২৭ বলে সোহান করেন ১০ রান।

মিরাজের দ্বিতীয় জীবন পাওয়ার পর আউট মুশফিক

এজাজ প্যাটেলের বলে দ্বিতীয়বার জীবন পান মেহেদী হাসান মিরাজ। টম ব্লান্ডেল ক্যাচ ছেড়ে দেন, স্লিপে দাঁড়ানো ড্যারিল মিচেলও বল লুফে নিতে পারেননি।

পরের বলেই নিউজিল্যান্ড পায় ষষ্ঠ উইকেট। মুশফিকুর রহিমের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। বাংলাদেশি ব্যাটার রিভিউ নিয়েও টিকতে পারেননি। নষ্ট হয় রিভিউ। ১১৬ বলে ৭ চারে ৬৭ রান করেন মুশফিক।

জীবন পেলেন মিরাজ

১৩ রানে জীবন পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এজাজ প্যাটেলের বলে মিড অফে ক্যাচ দেন বাংলাদেশি ব্যাটার। হেনরি নিকলস সামনে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নেন। তবে থার্ড আম্পায়ার রড টাকার রিপ্লে দেখেন। এক পাশ থেকে বল নিকলসের আঙুলের উপর দেখা গেলেও আরেক পাশ থেকে বল মাটিতে স্পর্শ করেছিল। বেঁচে যান মিরাজ।

অভিষেকে হতাশ করলেন দীপু

হতাশ করলেন শাহাদাত হোসেন দীপু। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টে নিজেকে চেনাতে পারলেন না বাংলাদেশি ব্যাটার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ২৪ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হওয়ার পর ক্রিজে নেমে চার মেরে রানের খাতা খোলেন তিনি। পরে এজাজ প্যাটেলের এক ওভারে তিন বলের মধ্যে দুটি বাউন্ডারি মারেন। প্রথম ১২ বলে ১২ রানের সবগুলোই বাউন্ডারি থেকে।কিউই স্পিনারকে আরও একটি চার মারেন দীপু। তবে আরেক স্পিনার ইশ সোধিকে সামলাতে পারলেন না। এলবিডব্লিউ হন ১৯ বলে ১৮ রান করে।

জীবন পেয়ে মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরি

৭১তম ওভারের দ্বিতীয় বল মুশফিকুর রহিমের ব্যাট ছুঁয়ে গেলো পেছনে। টম ব্লান্ডেল ধরতে পারলেন না। বল চলে গেলো সীমানার বাইরে। ৪৪ রানে বড় বাঁচা বেঁচে গেলেন মুশফিক। পরের ওভারের প্রথম বলে দুটি রান নিয়ে উদযাপন করলেন হাফ সেঞ্চুরি। ৭৯ বলে ৬ চারে ফিফটি করেন তিনি।

এক রান যোগ করে প্যাভিলিয়নে শান্ত

১০৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের ব্যাটে আরও রান প্রত্যাশা করা হচ্ছিল। কিন্তু এক রানের বেশি যোগ করতে পারলেন না। চতুর্থ দিনের খেলায় অষ্টম বলে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন তিনি। টিম সাউদির বলে টম ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দেন শান্ত। ১৯৮ বলে ১০৫ রানে তাকে থামতে হলো।

লিড বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ক্রিজে শান্ত-মুশফিক

চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস খেলে অপরাজিত নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে অধিনায়কের ব্যাটে চালকের আসনে বাংলাদেশ। সাত উইকেট হাতে রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের লিড ২০৫ রান।

এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তিতে থাকার কথা। কিন্তু সিলেটের রহস্যময় উইকেটে কিছুটা দুশ্চিন্তায় টিম বাংলাদেশ। কেন না বাংলাদেশ দল বুঝতে পারছে না, এখানে আসলে কত রান নিরাপদ।

ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন মুমিনুল হক। দলের লক্ষ্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলন তেমন কিছু বললেন না সাবেক টেস্ট অধিনায়ক, ‘এটা (টার্গেট কত দিলে নিরাপদ) বলাটা খুব কঠিন। আমার কাছে এখনও মনে হচ্ছে উইকেট ভালো। কত রান নিরাপদ এটা বলা অনেক কঠিন। ৪০০-ও হতে পারে, ৩৫০-ও হতে পারে। কালকের (শুক্রবার) খেলার ওপর নির্ভর করে। কাল চতুর্থ দিন, অন্যরকম আচরণ করতে পারে (উইকেট)। চারশ হলে ঠিক আছে…।’

আরও পড়ুন