মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধের চেষ্টা মেনে নেয়া হবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যিশুর জন্মস্থানে আক্রমণ চলছে। যুদ্ধ, হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। দেশেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করছে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি।
তিনি বলেন, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে তারা কি অর্জন করছে? এটাই আমার প্রশ্ন। আমরা চাই সংঘাত বন্ধ হোক। মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে নির্বাচনী ফায়দা করবে, এটা এদেশে চলবে না।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গণভবনে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, সব ধর্মের মূল কথা হলো মানুষের কল্যাণ। সেটা মেনে চললেই কোনো সংঘাত হবে না। আমরা কোনো সংঘাত চাই না। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। সবাই যার যার ধর্ম পালন করবে। দেশের মাটি সবার জন্য। ধর্মীয় সংঘাত আমরা চাই না। ধর্ম পালনে বাধা আমরা চাই না। যিশু মানবতার কথা শিখিয়েছেন। জাতির পিতাও সেটিই মানতেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানব কল্যাণে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। মানুষ বারবার আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা রেখেছে। মাঝে কিছুটা বাধা এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখন থেকেই অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে উঠছে। অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে অনন্য নজির গড়েছে।
বিশ্বের সব খৃস্টান ধর্মের মানুষকে বড় দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের মাটি সবার জন্য। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছে। সবার রক্ত মিশে গেছে এই মাটিতে। এ সময় প্যালেস্টাইনে ইসরাইলের চালানো হামলার সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। সারাদেশে ভূমিহীন-গৃহহীনদের ঘর করে দিচ্ছি। বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সবার জন্য এটা প্রযোজ্য।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কাজ করি এদেশের মানুষের জন্য। আমরা মানবতার কথা বলি। যিশুখৃস্ট মানবতার কথা বলেছেন। মহানবী সা. মানবতার কথা বলেছেন। আমরাও ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার কল্যাণে কাজ করছি। সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করছে এই দেশে হাজার বছর ধরে। আমরাও এই নীতি মেনে চলছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার।
তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় সংঘাত আমরা চাই না। ধর্মীয় রীতি পালনে কেউ বাধা দিক সেটাও আমরা চাই না। আমরা প্রত্যেকে আনন্দ ভাগাভাগি করছি। এটাই সব থেকে আনন্দের। আনন্দ, সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নেই।
গণভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে কেক কেটে বড়দিন উদযাপনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্যরা।