বরিশালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় জনসভা মঞ্চে উঠছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৩টা দিকে বরিশাল-৪ নির্বাচনি এলাকার ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ এমপির বিপুলসংখ্যক সমর্থক প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসেন। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন একই আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহম্মেদের অনুসারীরা। নির্বাচন কমিশনে বাতিল হওয়া মনোনয়ন ফিরে পেতে বর্তমানে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াইয়ে আছেন শাম্মি। সমাবেশস্থলের প্রবেশপথে আনসার ক্যাম্পের সামনে দুপক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাধে। এতে ঘটনাস্থলেই সিরাজ সিকদার (৫৫) নামে একজন নিহত ও দুইপক্ষের ২৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে ১৩ জনকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সিরাজ সিকদার হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি বলে জানা গেছে।
এদিকে সিরাজকে নিজের কর্মী বলে দাবি করেছেন এমপি পঙ্কজ এবং ড. শাম্মি দুজনেই। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে তার সঙ্গেই লঞ্চে করে বরিশালে এসেছেন জানিয়ে এমপি পঙ্কজ বলেন, ‘আমরা সবাই একসঙ্গে এসেছি। জনসভা মাঠে ঢোকার সময় আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। সিরাজ সিকদার শুরু থেকেই আমার কর্মী এবং নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন।’
হামলার ঘটনাকে পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে পঙ্কজ আরও বলেন, ‘আমার লোকজন আসবে জেনে সমাবেশে ঢোকার মুখে প্রস্তুতি নিয়েছিল তারা। ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও বাকিদের আহত করা হয়।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ড. শাম্মি আহম্মেদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ধরেননি তিনি।
তার অনুসারী আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সৈয়দ মুনির বলেন, ‘সিরাজ সিকদার আমাদের কর্মী। হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিপু সুলতানের সঙ্গে তিনি বরিশালে এসেছিলেন। সমাবেশস্থলে ঢোকার মুখে সিরাজ সিকদারসহ আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।’
শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান তুহিন জানান, ‘সিরাজ সিকদারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি। ময়নাতদন্ত ছাড়া এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয়।