জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী জিএম কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে কোনও ছাড় দেয়নি। বরং যে ২৬টি আসনে নৌকা তুলে নিয়েছে, সেগুলোর দু-একটি বাদে সব আসনেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা তাদের পক্ষেই তারা কাজ করছে। তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের আসন ভাগাভাগি হলো কী করে?’
সোমবার সকাল থেকে রংপুর নগরীর কাছারী বাজারে আদালত এলাকায় আইনজীবী ও অন্যান্যদের সঙ্গে গণসংযোগ কালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় চেয়েছিলাম, প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা। আরেকটা চেয়েছিলাম অস্ত্র, পেশিশক্তি এবং অর্থের প্রভাব থেকে নির্বাচনকে সরিয়ে রাখা। তাহলে আমরা নির্বাচন করবো। সেখানে আওয়ামী লীগ তাদের নিজেদের ইচ্ছায় ২৬টি আসনে তাদের নৌকা প্রার্থী উঠিয়ে নিয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে এসব আসনে তাদের শক্ত-সমর্থ স্বতন্ত্র প্রার্থী রেখেছে। তারা কোনও বিদ্রোহী প্রার্থী নয়, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী। সেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে আওয়ামী লীগ সরাসরি কাজ করছে। তারা আমাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে না।’ তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে কোনও মহাজোট হয়নি। যারা এসব নিয়ে কথার ফুলঝুড়ি ছড়ান তারা অপপ্রচার করছেন।
তিনি দলীয় প্রার্থীদের বিষয়ে বলেন, ‘বরিশালসহ কয়েকটি আসনে জাপার কয়েকজন প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে দলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তবে আমাদের দলের নেতা, বিশেষ করে প্রার্থীদের মধ্যে আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে প্রার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেবো সে সামর্থ্য আমাদের নেই। তা ছাড়াও প্রার্থীদের নানান হুমকি-ধামকিসহ আরও অনেক সমস্যা আছে।’
জিএম কাদের বলেন, ‘রংপুরে আমাদের প্রচার-প্রচারণা করতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। কেউ বাধাও দিচ্ছে না। তবে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ভোটাররা যাতে পরিবার-পরিজনসহ ভোট দিতে আসেন, সেটিই আমাদের কামনা। তবে এবারের নির্বাচনে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু রংপুরে প্রচণ্ড শীত আর হিমেল বাতাস অব্যাহত রয়েছে, এটা কমলে ভোটারদের উপস্থিতি আশাব্যঞ্জক হবে।’
নিজের জয়লাভের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছি, দলমত নির্বিশেষে সবার কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। তা ছাড়া রংপুর হচ্ছে জাতীয় পার্টির দুর্গ, লাঙ্গলের ঘাঁটি। এখানকার মানুষ জাতীয় পার্টির প্রতি এমনিতেই সহানুভূতিশীল। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের দলের মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে এক লাখেরও বেশি ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। আর যেহেতু সদর আসন ভোটারও বেশি, আশা করি বিপুল ভোটে জয়ী হবো।’
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের কো-চেয়ারম্যান রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, জাহিদুল ইসলাম ও হাসানুজ্জামান নাজিম প্রমুখ।