বিএনপির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের আহ্বানের সঙ্গে চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোনও সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে নিজ নির্বাচনি এলাকায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
একই সঙ্গে তিনি বিএনপি-জামায়াতের গুজব ও প্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণকে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা ক্ষোভ ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও তাদের দোসররা নাশকতা-অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সন্ত্রাসী তৎপরতা শুরু করেছে। গতকাল তারা ঢাকার গোপীবাগে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে দুজন শিশুসহ চারজনকে হত্যা করেছে। কয়েকজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। এ ঘৃণ্য ও নিশংস সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি দেশকে ধ্বংস করতে চায়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ করতে চায়। এরা একাত্তরের পরাজিত শক্তি, পঁচাত্তরের ঘাতক দল। এদের বিশ্বাস করা যায় না। এরা মানুষকে পুড়িয়ে রাজনীতি করতে চায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কানাডার ফেডারেল রায় অনুযায়ী বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো তারা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছে এবং তারা প্রতিনিয়ত নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনবিরোধী অপপ্রচার করে যাচ্ছে। বিএনপির ভোট বর্জনের সঙ্গে চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোনও সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। বাংলাদেশ কোনও অপশক্তির কাছে কখনও মাথা নত করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।
সারা দেশে শান্তিপূর্ণ ভোট হবে জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। বিদেশি পর্যবেক্ষক সাংবাদিক যারা এসেছেন, তারাও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। আজ যে অপশক্তি নির্বাচন বর্জন করেছে, তাদের সন্ত্রাসীর চরিত্রের প্রমাণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, ট্রেনে আগুন দিচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসীর চরিত্র সম্পর্কে দেশের মানুষ অবগত। এই সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বিএনপি গণতন্ত্র হত্যাকারী ও হরণকারী দল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষের অধিকার হরণ করাই বিএনপির কাজ। এরা বিদেশিদের কাছে নালিশ দেয় বারবার। বিএনপি একটি গুজব পার্টি। তারা গুজব ছড়াচ্ছে। জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান তাদের গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। নির্বাচনে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য যে কর্মসূচি নিয়েছে, তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করুন।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষাবাহিনী শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিয়োজিত আছেন। আপনারা নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসুন। দলে দলে নিজেদের সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়ন করে ভোট দেবেন। কোনও প্রকার হস্তক্ষেপ ও ভয়ভীতির কাছে নতি স্বীকার করবেন না। যারা ভোট প্রদানে বাধা সৃষ্টি করবে, তাদের প্রতিহত করুন।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবেন, বিএনপি যেন নাশকতা করতে না পারে। আমরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। কেউ যেন বিজয় ছিনিয়ে না নিতে পারে, সে জন্যে সতর্ক থাকুন। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটে আবার সরকার গঠন করবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে নেতৃত্ব দেবেন। আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনের পরও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারে, এর কঠোর জবাব দিতে হবে। নির্বাচন হয়ে যাক, কোনও সন্ত্রাসী পার পাবে না। তাদের বিচার হবে। সন্ত্রাস চালানো বিএনপিকে কোথাও দাঁড়াতে দেবো না আমরা। কঠোর হতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।