গাজায় হামলা নিয়ে হেগের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) করা মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। অভিযোগে বলা হয়, গাজায় সামরিক অভিযানের নামে ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশটি ১৯৪৮ সালের ‘গণহত্যা কনভেনশন’ লঙ্ঘন করেছে। তবে ইসরাইল এ দাবি অস্বীকার করে জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ বানোয়াট।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার শিশুসহ অন্তত ২৩ হাজার ৪৬৯ জন নিহত এবং ৫৯ হাজার ৬০৪ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার হেগের আদালতে মামলার শুনানি শুরু হয়। ফিলিস্তিনে হামলা বন্ধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করার অনুরোধ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। শুক্রবার আত্মপক্ষ সমর্থন করে অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনি উপদেষ্টা তাল বেকার আদালতকে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগে প্রকৃত ঘটনার বিকৃত উপস্থাপন হয়েছে। যদি গণহত্যা ঘটে থাকে, তা ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাস করেছে বলে দাবি তার।
গত ডিসেম্বরে আইসিজেতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। মামলার চূড়ান্ত রায় পেতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। তবে এই মাসের শেষের দিকে গাজায় হামলা বন্ধে সম্ভাব্য জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে রায় আসতে বলে মনে করা হচ্ছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ইসরাইল আকাশ ও স্থলপথে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে গাজা ভূখণ্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৩ হাজারের বেশি লোককে তারা হত্যা করেছে।
এদিকে শুনানির দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক জায়গা থেকে ফিলিস্তিনি সমর্থকরা জড়ো হন। তারা ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে হেগের আদালতের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। ইসরাইলি উপদেষ্টা বেকারকে তারা ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যায়িত করে স্লোগান দেন।
লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রীয় অপরাধ বিষয়ক সিনিয়র লেকচারার টমাস ম্যাকম্যানাস আল-জাজিরাকে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগে প্রমাণিত হয়, ইসরাইল গাজায় এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছে, যা ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করে ফেলবে। এটা কোনো রাষ্ট্রের নীতি হতে পারে না।