ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে আমাদের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে দারিদ্র্য কমে গেছে। কৃষিনির্ভর দেশ থেকে আমরা শিল্প ও সেবাখাত নির্ভর হয়েছি। এখন তৈরি পোশাক খাতের পাশাপাশি রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে।
শনিবার ডিসিসিআই আয়োজিত দেশের সমসাময়িক অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ২০২৪ সালে ডিসিসিআইর বর্ষব্যাপী কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভে অস্থিতিশীলতা, এলসি খোলার জন্য ডলারের অপর্যাপ্ততা, গ্যাস সংকটসহ কিছু সমস্যা আছে। তবে এগুলো সব-ই সমাধান সম্ভব।
তিনি বলেন, আমরা সব ওভারকাম করতে পারব। সে সক্ষমতাও আমাদের আছে। কোনো কাজে চ্যালেঞ্জ থাকবে না, এমন দুনিয়াতে হয় না। বারবার বাংলাদেশ এসব সমস্যার সমাধান করেছে, এটা প্রমাণিত সত্য।
আশরাফ আহমেদ বলেন, আগামী এক দশকে আমরা বিশ্বের ২০টি বড় অর্থনীতির দেশে পৌঁছাতে যাচ্ছি। এখন আমাদের গ্রোথ ১০ এ নেমেছে, কিন্তু চীনসহ অনেক দেশের গ্রোথ পাঁচ শতাংশের নিচে। আমাদের গ্রোথের সব ফান্ডামেন্টাল ভালো আছে, কিছু ক্ষুণ্ন হয়নি। প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত।
তিনি বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ আছে। তবে সেটা বড় বিষয় নয়। আমাদের অর্থনৈতিক গ্রোথ চেঞ্জ করার মতো কোনো ফান্ডামেন্টালের পরিবর্তন হয়নি। সব ঠিক আছে।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ সমস্যা আমাদের আগেও হয়েছে। সেটা আমরা ওভারকাম করেছি। আর বিবিএস (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো) যে মূল্যস্ফীতির তথ্য দিচ্ছে সেটা নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বিবেচনায়। পরিস্থিতি এতটা খারাপ না।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি সবাইকে পীড়া দেয় সত্য। তবে এটা সারাবিশ্বে প্রভাব ফেলেছে। আমাদের মূল্যস্ফীতি ছয় শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু বাকি দুনিয়ার তুলনায় সেটা অনেক ভালো অবস্থা।
রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের আড়াই মাসের মজুত রিজার্ভ প্রয়োজন। সেখানে সাড়ে তিন মাসের রিজার্ভ মজুত রয়েছে।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে উদ্যোক্তাদের লোন পাওয়াটা সহজ করতে হবে। এছাড়া এসব খাতে দক্ষ মানুষের অভাব। শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন এনে তা পূরণ করতে হবে।
আশরাফ আহমেদ বলেন, প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সেজন্য কঠিনভাবে কাজ করতে হবে। অনেক আইনের পরিবর্তন ও সংযোজন প্রয়োজন। অন্যদিকে বৈশ্বিক বাজার থেকে আমাদের যে পরিমাণ ব্যবসা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, আমরা তার সামান্যও নিতে পারছি না। সেটা কিভাবে বাড়ানো যায়, সে সহায়কনীতি প্রয়োজন। আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আরও বেশি মানুষকে করের আওতায় আনতে হবে। পুঁজিবাজারে বন্ডের সেকেন্ডারি ট্রেড বাড়াতে হবে। এছাড়া জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনে গ্যাস আমদানি করতে হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধু ইউরোপ-আমেরিকার বাজারের ওপর নির্ভরশীল না থেকে চীন ভারত ও আফ্রিকার মতো জনবহুল দেশে যেতে হবে। কারণ এসব দেশে কনজিউমার বেশি। সেজন্য প্রয়োজনীয় ইকোনোমিক ডিপ্লোমেসি করতে হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে ডিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী এবং সহ-সভাপতি জুনায়েদ ইবনে আলী উপস্থিত ছিলেন।