সোমবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ

যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাস দিয়ে যেভাবে নারীর হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো

যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে কেনেথ স্মিথ নামের সেই হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর দণ্ড কার্যকর হয়। এটি আলাবামা অঙ্গরাজ্যে তথা যুক্তরাষ্ট্রে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রথম ঘটনা।

 

২০২২ সালে প্রাণঘাতী ইনজেকশন প্রয়োগ করে প্রথম দফায় কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চেষ্টা করা হয়। তবে তখন কয়েকবার চেষ্টা করেও স্মিথের শরীরে ইনজেকশনের সুচ ঢোকাতে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। পরে ইনজেকশনের মাধ্যমে দণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। আলাবামার রিপাবলিকান গভর্নর কে আইভি আলাবামা অঙ্গরাজ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া নতুন করে পর্যালোচনার ঘোষণা দেন। এর কয়েক মাস পর পর্যালোচনা শেষ হয়। কেনেথ স্মিথকে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

কারা কর্মকর্তারা বলেছেন, গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৫৩ মিনিটের দিকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাত ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

১৫ শতাংশ ছাড়ে টিকেট দিবে বিমান

যেভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো

গতকাল স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা শুরুতে তাঁকে একটি স্ট্রেচারে শুইয়ে দেন। এরপর তাঁর মুখে বিশেষ একটি মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হয়। মাস্কটি নাইট্রোজেন–ভর্তি একটি সিলিন্ডারের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই মাস্কের ভেতর দিয়ে অক্সিজেন চলাচলের কোনো সুযোগ ছিল না।

গতকাল স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া দেখার জন্য পাঁচ সাংবাদিককে সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁরা কাচের দেয়ালের অপর পাশ থেকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শী ওই সাংবাদিকেরা বলেছেন, নাইট্রোজেন প্রয়োগের পরও কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্মিথের জ্ঞান ছিল। এরপর তিনি কাঁপতে থাকেন। দুই মিনিট পর্যন্ত তিনি স্ট্রেচারের ওপর গড়াগড়ি করতে থাকেন। এরপর কয়েক মিনিট ধরে তাঁকে গভীর শ্বাস নিতে দেখা যায়। এরপর তাঁর শ্বাসের গতি ধীর হয়ে আসে এবং তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা আরও বলেন, মাস্ক দিয়ে নাইট্রোজেন গ্যাসের সরবরাহ শুরুর আগে স্মিথ শেষবারের মতো দীর্ঘ একটি বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ‘আজ রাতে আলাবামা কর্তৃপক্ষ মানবিকতাকে এক ধাপ পেছনে নিয়ে গেল।’

ঘটনাস্থলে স্মিথের স্ত্রী এবং অন্য স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উদ্দেশে স্মিথ বলেন, ভালোবাসা, শান্তি আর জ্যোতি নিয়ে আমি পৃথিবী ছাড়ছি। তোমাদের সবার জন্য ভালোবাসা থাকল।’

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর আলাবামার কারেকশনস কমিশনার (দণ্ড কার্যকরসংক্রান্ত কর্মকর্তা) জন হ্যাম একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্মিথ যে স্ট্রেচারের ওপর গড়াগড়ি খাচ্ছিলেন, সেটা প্রত্যাশিত ছিল কি না। জবাবে হ্যাম বলেন, ‘যতটা বেশি সময় পর্যন্ত পারা যায়, স্মিথ তাঁরশ্বাস ধরে রাখতে চেয়েছেন বলে মনে হয়েছে। তিনি কিছুক্ষণ পর্যন্ত সীমাবদ্ধতাগুলোর বিরুদ্ধে লড়েছেন। তবে এটি যেহেতু ইচ্ছার বিরুদ্ধে চালানো একটি প্রক্রিয়া এবং এ প্রক্রিয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই এগুলো সব প্রত্যাশিতই ছিল।’

আরও পড়ুন