ইরান রবিবার জানিয়েছে, অতীতের একাধিক ব্যর্থতার পর তারা একটি রকেটের সাহায্যে সফলভাবে তিনটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করতে সমর্থ হয়েছে। পশ্চিমারা বলছে, তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নতকরণে সর্বশেষ কর্মসূচীর অংশ এটি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত এক ভিডিওতে, রাতের বেলা সিমোরগ রকেট উৎক্ষেপণ করতে দেখা গেছে। ফুটেজটি বিশ্লেষণ করে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস(এপি) দেখতে পেয়েছে, ইরানের গ্রামীণ সেমনান প্রদেশের ইমাম খোমেনি স্পেসপোর্ট থেকে রকেটটা নিক্ষিপ্ত করা হয়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, উৎক্ষেপণ করা স্যাটেলাইটগুলোর নাম মাহদা, কায়হান-২ ও হাতেফ-১। মাহদাকে একটি গবেষণা এবং কায়হান এবং হাতেফ যথাক্রমে গ্লোবাল পজিশনিং এবং যোগাযোগের জন্য ক্ষুদ্র উপগ্রহ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
পরপর পাঁচটি ব্যর্থ উৎক্ষেপণের পর স্যাটেলাইট বহনকারী রকেট সিমোরগ সফল হয়েছে। সিমোরগ বা “ফিনিক্স” রকেটের ব্যর্থতা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইরানের বেসামরিক মহাকাশ কর্মসূচির ধারাবাহিক বিপর্যয়ের অংশ ছিল।
ফার্সি ভাষায়, রকেটটিতে ‘উই ক্যান’ (‘আমরা পারি’) স্লোগান লেখা ছিল, যেটা সম্ভবত আগের ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার দিকে ইঙ্গিত করে লেখা হয়েছে।
দেশটির ভাষ্যমতে, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে উপগ্রহ স্থাপনের উপযোগী করে রকেটটিকে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি একটি দ্বি-পর্যায়, তরল জ্বালানী রকেট।
তবে গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের ২০২৩ সালের বিশ্বব্যাপী হুমকি মূল্যায়নে বলা হয়েছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ যানের উন্নয়ন ইরানের জন্য আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ‘সময়সীমা কমিয়ে দেয়’ কারণ এতে একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের ২০২৩ বিশ্বব্যাপী হুমকি নিয়ে প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্টভাবে সিমোরগকে সম্ভাব্য দ্বৈত-ব্যবহারের রকেট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল যে, ইরানের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করে। পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কোনো তৎপরতা না চালাতে তেহরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল তারা। ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সংক্রান্ত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ গত অক্টোবরে শেষ হয়েছে।