সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার ঘটনায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীকে জড়িয়ে মূলত তেহরানকেই দুষছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
রোববার (২৮ জানুয়ারী) জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ৩ সেনা নিহত হয়। আহত হয় আরও অন্তত ৩৪ জন। বাইডেন এই হামলার জন্য ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গেছে বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম এমন প্রাণঘাতী হামলা চালানো হলো। মার্কিন বাহিনীর ওপর এমন হামলার কারণে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে এক নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় নিহত তিন সেনার উদ্দেশ্যে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
এসময়ে বাইডেন বলেন, যদিও আমরা এই হামলার তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছি তবে আমরা জানি যে, সিরিয়া ও ইরাকে সক্রিয় ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো এ হামলা চালিয়েছে। কোনো সন্দেহ রাখবেন না, আমরা যথাসময়ে আমাদের নিজস্ব পদ্ধতিতেই দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনব।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড বা সেন্টকম আশঙ্কা করছে, হামলায় অন্তত ৩৪ জন সেনা আহত হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এক বিবৃতিতে সেন্টকম বলেছে, জর্ডান থেকে ৮ সেনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভোরে ব্যারাকের কাছে ড্রোনটি আঘাত হানে এর কারণে হতাহতের সংখ্যা বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরান সমর্থিত কট্টরপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সংগঠন ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক জর্ডান–সিরিয়া সীমান্তে একটি ঘাঁটিসহ তিনটি ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
গেছে ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হামাসের ইসরায়েলে হামলায় গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। হামাসের ওই হামলায় ইসরায়েলে প্রায় সাড়ে ১১ শ জন নিহত হয়। প্রতিক্রিয়ায় গাজায় এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৪২২ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
এরপর থেকে ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে মার্কিন বাহিনী ১৫০ বারেরও বেশি হামলার শিকার হয়েছে। রোববারের হামলার আগে কমপক্ষে ৭০ জন হতাহত হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছে। ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতি বাহিনীও মার্কিন যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে
ওয়াশিংটন এ অঞ্চলে যুদ্ধ করছে না বলে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক অবস্থান বজায় রাখলেও ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিচ্ছে এবং ইয়েমেনের হুতি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।