একে একে জরিয়ে পরেছে গাজায় হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, জর্ডানে ছড়িয়ে পড়ছে উত্তেজনা। যদি এই উত্তেজনাকে প্রশমন করা না হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) তারা সিরিয়া ও ইরাকে ইরানপন্থি গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৮৫টি হামলা করেছে। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৮ জন।
বলা হচ্ছে , গাজায় যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসকে অস্ত্র ও অন্যান্য সহযোগিতা দিচ্ছে ইরান। এ ছাড়া ইরানপন্থি হিজবুল্লাহ, হুতিরাও ইসরাইল বা পশ্চিমাপন্থিদের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
গেছে রোববার জর্ডানে মার্কিন এক সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করা হয়। তাতে বেশ কয়েকজন সেনা নিহত হয়। এর বদলা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একে নিজ দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে ইরাক। তবে ইরান প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
ওদিকে গাজায় রাফা এলাকাকে এতদিন ‘সেফ জোন’ বা নিরাপদ এলাকা বলে বর্ণনা করা হচ্ছিল। এবার সেখানে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ। ফলে ওই অঞ্চলে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত কমপক্ষে ১০ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ইউনিসেফ বলেছে, গাজায় প্রায় ১৭ হাজার শিশু নিঃসঙ্গ হয়েছে বা তাদের পিতামাতার কাছ থেকে আলাদা হয়ে পড়েছে। ৭ই অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে ২৭ হাজার ১৩১ জন নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের স্যাটেলাইট সেন্টার স্যাটেলাইটে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে বলেছে, ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় ইসরাইলের হামলায় শতকরা ৩০ ভাগ ভবন বিধ্বস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আকাশপথে বোমা হামলা, গোলানিক্ষেপ এবং বাড়িঘর ভেঙে দেয়া হয়েছে পুরো শহরের বিভিন্ন এলাকায়।
এর মধ্যে আছে বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের বাড়িঘর। মোট ৬৯ হাজার ১৪৭টি অবকাঠামো, যা গাজার মোট অবকাঠামোর শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ, তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২২ হাজার ১৩১টি অবকাঠামো একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৬৬টি অবকাঠামো। কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৯৫০টি অবকাঠামো। বলা হয়েছে, ৬ থেকে ৭ই জানুয়ারি পাওয়া ছবি নিয়ে বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গাজা সিটিতে অবস্থিত বেলজিয়ামের ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির ভবনে বোমা হামলার পর শুক্রবার বেলজিয়ামে নিয়োজিত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বেলজিয়াম সরকার। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাদজা লাহবিব এ কথা বলেছেন। তিনি এক্সে দেয়া এক পোস্টে বলেছেন, বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের নীতির লঙ্ঘন। সব পক্ষকেই এই আইন মানতে হবে।
বেলজিয়ামের উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই হামলায় কোনো বেসামরিক ব্যক্তি হতাহত হয়েছেন কিনা তা তারা জানা যায়নি। যে ভবনে হামলা চালানো হয়েছে তা হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে শেয়ার করতো বেলজিয়াম। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, অভিযোগ দেয়ার পর তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেছেন, কখন ওই বোমা হামলা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়।
তারা সন্দেহ করছে বুধবার হামলা হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানতে পেরেছে বেলজিয়াম যে কয়টি দেশ গাজায় টেকসই মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে, যুদ্ধে ইসরাইলের সমালোচনা করছে, তার মধ্যে অন্যতম বেলজিয়াম।