বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আরও ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
সাক্ষীরা হলেন- ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের রিটেল বিজনেস ডিভিশনের শওকত আলী খান, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের সেলস ম্যানেজার সাজ্জাদ মাহমুদ সবুজ, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার রেজওয়ানুল হক এবং ন্যাশনাল
আজ মঙ্গলবার ঢাকার সিনিয়র মহানগর স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর বুধবার বিকেলে ৩টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে অভিযোগপত্রভুক্ত ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। দুদক প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল দুদকের পক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণে সহায়তা করেন।
এদিনও বিএনপি দলীয় আইনজীবীরা মিছিল নিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তখন আদালতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরাও অবস্থান করছিলেন।
এর আগে গত ৩০ ও ৩১ মে এবং গত ৫ জুন মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ রাখায় বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গত ৩১ মের ঘটনায় মহানগর দায়রা জজ আদালতের নাজির কোতোয়ালি থানায় একটি জিডিও করেছেন। সেখানে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহম্মেদ তালুকদারসহ ২৮ আইনজীবীর নাম উল্লেখ ও ১০০ থেকে ১৫০ অজ্ঞাতনামা আইনজীবীর কথা উল্লেখ রয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। চলতি বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট তারেক ও জোবায়দাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিট আবেদন খারিজ করে দেন।
রিট খারিজ করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্ট একইসঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন। এছাড়া ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ রায় পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মামলার রেকর্ড ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠাতে বলা হয়।
ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।
২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
চিকিৎসক জোবায়দা বর্তমানে স্বামী তারেকের সঙ্গে ১৩ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দদুক মামলাটি করেছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সালে এর কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবায়দা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে জোবায়দাকে বরখাস্ত করে সরকার।