শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৪) গণধর্ষণের পর হত্যার মামলায় বাবু চৌকিদার (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড ও তিন যুবকের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক দণ্ডপ্রাপ্তকে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুর ২টায় শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাবু চৌকিদার ডামুড্যা উপজেলার বড় নওগাঁ গ্রামের তাজুল ইসলাম চৌকিদারের ছেলে। এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন একই গ্রামের আজগর আলী খানের ছেলে জুয়েল খান (১৯), বাচ্চু সরদারের ছেলে ফারুক সরদার (২৪) ও চরভয়রা গ্রামের বাদশা মিয়া সরদারের ছেলে তানভীর হোসেন শামীম (২৪)।
মামলার চার্জশিট ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ডামুড্যা উপজেলার একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বাবু চৌকিদারের। একাধিকবার তারা শারীরিক মেলামেশা করে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী বাবুকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু বাবু বিয়ে করতে রাজি ছিলনা। ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাবু চৌকিদার পরিকল্পিতভাবে ওই ছাত্রীকে ফোন করে বাড়ির পাশের বাগানে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে বাবুর সহযোগী জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভীর হোসেন শামীম ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে চাইলে কাজল ডাক চিৎকার দেয়। পরে তারা সবাই মিলে কাজলকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ খালে ফেলে দেন। পরদিন সকালে বাড়ি থেকে ১০০ গজ দূরে খালের মধ্যে থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় কাজলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই দিনই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ বাবু চৌকিদার, জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভীর হোসেন শামীমকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে তানভীর হোসেন শামীম ছাড়া বাকি তিন আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলা তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালত চার্জ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করে। ২০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষগ্রহণ শেষে আজ বুধবার দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আহমেদ বলেন, ‘এই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা একটি আলোচিত ঘটনা। আসামিদের সাজা দিয়ে আদালত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী শাহ আলম বলেন, আসামি পক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।