একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার মুমুর (৪১) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন রাতেই তার মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মা ডানা কবিরের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বাথরুমের জানালার সঙ্গে গলায় রশিয় বাঁধা অবস্থায় তার লাশ ঝুলছিল। বাসা থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করা হচ্ছে— তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।
শুক্রবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে শাহরিয়ার কবিরের পরিবারের কেউ গণমাধ্যমে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি। মেয়ে হারানোয় শোকাহত শাহরিয়ার কবির অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার বাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বনানী থানার এসআই গুলশান আরা বলেন, ‘মহাখালীর আমতলীর একটি বাসা থেকে অর্পিতা শাহরিয়ারের লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ওই রাতেই তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অর্পিতা আত্মহত্যা করেছেন। তবে তিনি কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি পুলিশ। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
অর্পিতা লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করেছেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মা ডানা কবিরের মৃত্যুর পর তিনি দেশে আসেন। এর পর থেকে দেশেই ছিলেন। বৃহস্পতিবার তার লন্ডনে ফেরার কথা ছিল। আগের দিন বুধবার রাতে বাসার বাথরুমের জানালার সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার লিখে যাওয়া একটি চিরকুটে (সুইসাইড নোট) আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করেছেন অর্পিতা।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল জানান, বৃহস্পতিবার মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে অর্পিতার লাশ দাফন করা হয়েছে। তিনি কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগামী রোববার মহাখালীর বাসায় তার কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে।
২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি শাহরিয়ার কবির তার স্ত্রী ডানা কবিরকে হারান।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মহাখালীর ওই বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনদের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।