মঙ্গলবার, ৫ই নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় জামায়াত

জনগণের দাবি মেনে সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে জামায়াত ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, এবারের নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সে দাবি আদায়ে যা করা দরকার, আমরা সেই আন্দোলন করব ইনশাআল্লাহ।

শনিবার (১০ জুন) দুপুর ২টায় রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। নানান নাটকীয়তার পর গত শুক্রবার রাতে কিছু মৌখিক শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জামায়াত আমির শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতা ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে শুরু হয় জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমাবেশ। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ এক দশক পর রাজধানীতে ইনডোরে (ঘরোয়াভাবে) সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

তিনি বলেন, সংবিধান পরিবর্তন করে জনগণের দাবি মেনে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রের অপরিহার্য উপাদান নির্বাচন। সেটা হতে হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। সেটা করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে হবে।

মো. তাহের বলেন, কিন্তু এরা দিনের ভোট রাতে করে। লজ্জাতো ঈমানের অঙ্গ। কিছুটা তো লজ্জা থাকা উচিত নেতাদের। সুতরাং বলবো, ২০১৪ ও ২০১৮ গেছে যাক। এবার ২০২৪ আর সেভাবে যাবে না। যদি আওয়ামী লীগ বুঝে তাহলে আসুন আলোচনা করুন। এবারের নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সে দাবি আদায়ে যা করা দরকার আমরা সেই আন্দোলন করবো ইনশা আল্লাহ।

ডা. তাহের দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন। সেই সঙ্গে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। তা না হলে জামায়াত মুক্ত করবে এবং পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে। একইসঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনার দাবি এবং একটি নৈতিকতাসম্পন্ন ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ তৈরির জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, আজকে দেশের শাসক ও মানুষ সৎ হলে সোনার দেশ হতাম। কিন্তু সেটা করতে পারিনি। আপনারা না পারলে আমাদেরকে সহযোগিতা করুন। তাহলেই দেশের পরিবর্তন হবে। সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।

ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাইরের খোলা জায়গায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং ফুটপাতে অসংখ্য নেতাকর্মী অবস্থান নেন। একপর্যায়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি মূল সড়কে গিয়ে ঠেকে। ফলে মৎস্যভবন ক্রসিং থেকে শাহবাগ অভিমুখী সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং বৃষ্টিতে ভিজে নেতাকর্মী রাস্তায় অবস্থান নেন।

নেতাকর্মীরা জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন। বক্তব্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামী সংগীত পরিবেশন ও কবিতা আবৃত্তি করা হয়। সমাবেশ ঘিরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিল।

সভাপতির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াত সুশৃঙ্খল ও সাংবিধানিক সংগঠন।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য হামিদূর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার সম্পাদক এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মূসা, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, সহ: সেক্রেটারী মাওলানা মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী দেলওয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, ড. আব্দুল মান্নান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারী আতিকুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারী জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম সহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

আরও পড়ুন