মঙ্গলবার, ৫ই নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ

চট্টগ্রামের হাটে পশু আছে বিক্রি নেই, দাম বেশি

 

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র ৫ দিন। এই সময়ে কোরবানির পশুর হাট জমজমাট থাকার কথা।চট্টগ্রামে এখন ঘরে ঘরে গরুর বাজার।আগের ঐতিহাসিক বাজার এখন নেই।যে খানে সেখানে দেখা যাচ্ছে গরুর বাজার।ক্রেতার এখন চিন্তা নেই।শেষ দিন যেখান ইচ্ছা সে খান থেকে গরু একটি নিয়ে ফেলবো।আগে অনেক দূরে গরুর বাজার খুজতে হতো।এখন ঘরে ঘরে বাজার ।তাই ক্রেতাদের নো চিন্তা। তবে বৃষ্টির কারণে বৈরী আবহাওয়া ও অতিরিক্ত দামের কারণে বেচা-কেনায় অনেকটা ভাটা পড়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত গরু-ছাগল আনা হলেও ক্রেতাদের অধিকাংশই বেশি দামের কারণে ফেরত যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাড়তি দামের কারণে এখনো জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট। ‘বাজার ভর্তি গরু আছে। তবে প্রতিটি গরুর দাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি চাওয়া হচ্ছে। যে কারণে গরু না কিনে ফেরত যাচ্ছে মানুষ।অনেকে শেষ দিন ২৮ তারিখ গরু কিনবো চিন্তা করছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সাগরিকা বাজারে গরু নিয়ে আসানুর মোহাম্মদ বলেন, আমরা ৫ জন মিলে ৩০টা গরু নিয়ে মঙ্গলবার চট্টগ্রামে এসেছি। আমরা বাছাইকৃত গরু নিয়েই এসেছি। আর এই ৩ দিনে মাত্র ১টি গরু বিক্রি হয়েছে। মানুষ আসে, দর করে আর বেশি দাম বলে চলে যায়।

গরুর খাদ্যের দাম যে গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে সেটা বোঝে না। আমরা তো আর লস দিয়ে বিক্রি করতে পারবো না। বিবিরহাট বাজারে কুষ্টিয়া থেকে আসা ব্যাপারী কেরামত কাসেম বলেন, এখন এক বস্তা গমের ভুসির দাম ২ হাজার ২শ’ টাকা, গত বছর তা ছিল ১ হাজার ৭শ’ টাকা। একইভাবে ৭৪ কেজির এক বস্তা খৈল ১ হাজার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬শ’, ৫০ কেজি ধানের কুড়া ২শ’ টাকা বেড়ে ৯শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খেসারি ও ছোলার ভুসির দামও অনেক বেড়ে গেছে, যে কারণে পশুর দামও বেড়েছে। নগর হাউজিং এস্টেট গরুর বাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. রফিক বলেন, প্রায় ১০ হাজার গরু রাখার জায়গা রয়েছে এই মাঠে।
শুক্রবার থেকে বাজার শুরু হলেও এখনো সেভাবে জমে উঠেনি। কিছু ক্রেতা আসছে, তবে এখনো গরু কিনতে আগ্রহী নয় তারা। কেনার চেয়ে দর-দাম দেখছেন বেশি। ফরিদপুর থেকে গরু নিয়ে আসা রমজান মোল্লা বলেন, আমাদের এলাকা থেকে ১২ জন ব্যাপারী ৫০টি গরু এনেছেন এই হাটে। সবগুলো বড় সাইজের গরু। সবগুলো গরুর দামও ২ লাখ টাকার উপরে। গত বছরও আমরা ৫০টি গরু এনেছিলাম। সবগুলোই বিক্রি হয়েছিল।

আশাকরি এবারো সব বিক্রি হবে। এদিকে হাটে এখনো পশু বেচাকেনা না জমলেও খামারে বেড়েছে ক্রেতার আনাগোনা। অনেক খামারে ইতিমধ্যে পশু বিক্রি জমজমাট। অনেকে কেনার পর ঈদের দিন পর্যন্ত খামারেই রেখে দিচ্ছেন। নগরের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় অবস্থিত এশিয়ান এগ্রোর ম্যানেজার মো. রায়হান বলেন, এবারে কোরবানির জন্য আামাদের খামারে ১৭৫টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছিল। বর্তমানে ৩০টির মতো গরু রয়েছে। এদিকে চট্টগ্রামের সাগরিকা ও নূর নগরে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ‘ডিজিটাল হাট’ চালু করা হয়েছে। এ বিষয়ে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘কোরবানির গরুর বাজারে দূর-দূরান্ত থেকে পশু কেনা-বেচা করতে মানুষ আসেন।

এই কোরবানির বাজারকে কেন্দ্র ক্ষেত্রে বিভিন্ন অপরাধচক্র জাল নোট সরবরাহ, পশুর ট্রাকে ডাকাতি, ক্রেতাদের টাকা ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ কারণে আমরা প্রাথমিকভাবে দু’টি হাটে ‘ডিজিটাল হাট’ সেবা চালু করেছি। এবারে দু’টি হাটের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে সবগুলো কোরবানির হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের সুবিধা সৃষ্টি করবে সিটি করপোরেশন।’ চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বলেন, চট্টগ্রামে এবার কোরবানির পশুর চাহিদা ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৩টি। যা গত বছর ছিল ৮ লাখ ১৩ হাজার ৫০টি। এ বছর স্থানীয় পশু উৎপাদন ৮ লাখ ৪২ হাজার ১৬৫টি।

আরও পড়ুন