সিরিজ বাঁচানোর লড়াই, অন্যদিকে নিয়মিত অধিনায়ক তামিমের অনুপস্থিতি সবমিলিয়ে কিছুটা হলেও বাড়তি চাপ নিয়ে আজ মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেই হতাশার চিত্রই যেন ফুটে ওঠেছে দলের মাঠের পারফরম্যান্সে। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং ধ্বংস। সেখান থেকে মুশফিক-মিরাজের ব্যাটে অন্তত মান বাঁচাতে পেরেছে বাংলাদেশ। তবে সিরিজে টিকে থাকতে পারেনি। ১৪২ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে সফরকারীরা। আর তাতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে আফগানিস্তান।
টস হেরে শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩১ রান করেছে আফগানিস্তান। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ১৪৫ রান এসেছে রহমানুল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে। তাছাড়া সেঞ্চুরি পেয়েছেন আরেকন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানও। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় ৪৩ ওভার ২ বলে ১৮৯ রানে থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। যেখানে সর্বোচ্চ ৬৯ রান এসেছে মুশফিকের ব্যাট থেকে।
ব্যাট করতে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। মুজিবের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাজমুল। নবম ওভারের প্রথম বলে ফারকীর বলে বোল্ড হন নাইম শেখও। ২১ বলে মাত্র ৯ রান করেন তিনি।
২৫ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হাল ধরেন সাকিব ও তাওহীদ হৃদয়। ৬৫ রান পর্যন্ত দলেকে টেনে নিয়ে যান এই জুটি। তবে এরপর আবার মড়ক শুরু হয়। একে একে বিদায় নেন হৃদয়, সাকিব ও আফিফ হোসেন। ৭২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দল যখন একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় তখন হাল ধরেন মুশফিক ও মিরাজ। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ১৫৯ রান পর্যন্ত। এই রানে মিরাজ ফিরলে ভাঙে ৮৭ রানের জুটি। দলের সঙ্গে আর ১০ রান যোগ হতে ফেরেন হাসান মাহমুদও। আর নবম উইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ২০ রানের জুটি গড়ে আউট হন মুশফিক। ৮৫ বলে ৬৯ রান করেন তিনি। ইবাদত হোসেন চোটের কারণে বাংলাদেশের বোলিং ইনিংসের সময়ই মাঠ ছাড়েন পরবর্তীতে আর ব্যাট না করায় ১৮৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই আফগান ওপেনারের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে বাংলাদেশ দল। ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩১ রান তোলার পথে উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড ২৫৬ রান তোলে আফগানরা।
২৫৬ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানের বলে গুরবাজের পতনের পর অবশ্য ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। ২৫৯ রানের মাথায় মোস্তাফিজুর রহমান রহমত শাহকে ফেরানোর পর ২৬৬ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ফেরেন হাশমতউল্লাহ শাহিদিও। ২৮৬ রানের মাথায় নাজিবুল্লাহ জাদরানকেও ফেরান মিরাজ। আর সেঞ্চুরির পরপরই ২৯৯ রানের মাথায় ইব্রাহিমকে ফেরান মোস্তাফিজ। ৩০৬ রানের মাথায় সাকিবের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন রশিদ খান। ৩১৮ রানের মাথায় আজমাতুল্লাহ ওমারজাইকে ফেরান মোস্তাফিজ। আর শেষ ওভারে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে হাসান মাহমুদের শিকার হন মুজিব উর রহমান। শেষ ওভারের শেষ বলে ফারুকিকেও ফেরান হাসান।
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার সাকিব আল হাসান। ১০ ওভারে ৫০ রানের বিনিময়ে এই বাহাতি স্পিনারের শিকার ২ উইকেট। ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে সাকিবের সমান ২ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজও। ২ উইকেট নিলেও ৯ ওভারে ৬০ রান নিয়েছেন মিরাজ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার। এর আগে ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে ১৩৬ রানে হারে টাইগাররা।